বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন
মামুন আহমেদ,বানারীপাড়া॥ আসন্ন ঈদুল অাজহা বা কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়-বানিজ্যে ঐতিহ্যবাহী বানারীপাড়ার প্রাচীনতম কামার শিল্পের কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঈদ যতোই ঘনিয়ে অাসছে ততোই তাদের ব্যস্ততা বেড়ে চলেছে। কোরবানীর পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো কিংবা মাংস কাটাকুটির জন্য উপজেলার বন্দর বাজারের কামারপট্টিসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের কামারশালার কামাররা দেশি প্রযুক্তির ছুরি, দা, বটি, কুঠার, খুন্তা, শাবল,
হাসুয়া ও চাপাতি তৈরিতে এবং পুরনোগুলো মেরামত বা শান দিতে কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে নাওয়া-খাওয়া ভুলে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন। বছরের অন্যান্য সময় তেমন কাজ না থাকলেও ঈদুল অাজহায় তাদের কর্মব্যস্ততা বহুগুণ বেড়ে যায়
। প্রতিদিন শত শত মানুষ কামারশালায় ছুটছেন তাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার জন্য। কামাররা কিছু দা, বটি ও অন্যান্য উপকরণ রেডিমেট তৈরি করে দোকানের সামনে সাজিয়ে রাখেন। সেখান থেকেও ক্রেতাদের কেউ কেউ পছন্দের পণ্য ক্রয় করেন ।
চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০ টাকা, দা ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা অার চাপাতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা অভিযোগ করে জানান, গত বছরের তুলনায় এবার একটু বেশি দাম দিয়ে দা, বটি কিনতে হচ্ছে, এমনকি শান দিতেও ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া বন্দর বাজারের কামারপট্টির সুধীর কর্মকার জানান, ‘প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, কারিগরদের মজুরি বৃদ্ধি, তৈরি পণ্যসামগ্রির বিক্রয়মূল্য কম, কয়লার মূল্য বৃদ্ধি, উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এ সব লোহার পণ্য তৈরিতে গত বছরের তুলনায় খরচ বেশি পড়ছে’।
উল্লেখ্য, বানারীপাড়ার কামারশিল্প অাজ তার অতীত জৌলুস হারাতে বসেছে। অত্যাধুনিক মেশিনে স্টিলের তৈরি লোহা সদৃশ পশুর চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কাটার নানা উপকরণ বাজারে অাসার কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই মানুষ কামার পল্লীতে যাওয়ার অাগ্রহ হারাচ্ছে।
Leave a Reply